গাড়ির পার্টস ও গার্মেন্টস পণ্যের আড়ালে মদ আমদানিঃ পারিবারিক সিন্ডিকেটের ০১ জন গ্রেফতার

Total Views : 672
Zoom In Zoom Out Read Later Print

তারা দুবাই থেকে ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে এই বিশাল মদের চালান ‌আনে এবং এগুলো আবার তাদের সিন্ডিকেটের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের মাধ্যমে বন্দর থেকে খালাস করিয়ে নেয়।

টিভি, গাড়ির পার্টস ও গার্মেন্টস পণ্যের আড়ালে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মদের ব্যবসা করছিল একটি চক্র। চক্রটির মূল হোতা আজিজুল ইসলাম ও তার দুই ছেলে আহাদ ও আশিক।

শাহাদাত হোসেন রিটনঃ

শুল্ক ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে আমদানি করা দুই কনটেইনার বিদেশি মদ জব্দ করার পর র‍্যাব জানাল যে এর পেছনে রয়েছে একটি পারিবারিক সিন্ডিকেট। বাবা ও দুই ছেলের ওই সিন্ডিকেট ভুয়া গার্মেন্ট প্রতিষ্ঠানের পণ্যের নামে দুবাই থেকে মদের এই বিশাল চালান দেশে আনার চেষ্টা করে।

জালিয়াতির মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে বের করে নিয়ে যাওয়ার পর নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁয় জব্দ করা মদের দুটি চালানে প্রায় ২৫ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত চালান দুটি ধরা পড়ায় সেই তৎপরতা ভেস্তে যায়।

শনিবার নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ এলাকার সালাউদ্দিন পার্কিং স্ট্যান্ড এর সামনে চেকপোস্ট স্থাপন করে সন্দেহজনক ঢাকাগামী বিভিন্ন মালবাহী ট্রাক এবং কন্টেইনারসহ ট্রেইলার তল্লাশি শুরু করে। তল্লাশির একপর্যায়ে সন্দেহজনক দুইটি কন্টেইনার টেইলার তল্লাশি করে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ৩৬ হাজার ৮১৬ বোতল বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত মদের নির্ধারিত মূল্য ৩১ কোটি ৫৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা। ভ্যাটসহ যার মূল্য ৩৬ কোটি ৮৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা। 

টিভি, গাড়ির পার্টস ও গার্মেন্টস পণ্যের আড়ালে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মদের ব্যবসা করছিল একটি চক্র। চক্রটির মূল হোতা আজিজুল ইসলাম ও তার দুই ছেলে আহাদ ও আশিক। এ ঘটনায় দেশি ও বিদেশি মুদ্রাসহ আহাদ ও তার দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব।

জুলাই ২৪,২০২২ইং রোববার বিকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, গাড়ির পার্টস ও গার্মেন্টস পণ্যের আড়ালে একটি চক্র অবৈধভাবে মদ আমদানি করে আসছিল। শনিবার নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁর টিপর্দিতে সালাউদ্দিন পার্কিং স্ট্যান্ড এর সামনে চেকপোস্ট স্থাপন করে সন্দেহজনক ঢাকাগামী বিভিন্ন মালবাহী ট্রাক এবং কন্টেইনারসহ টেইলার তল্লাশি শুরু করে। তল্লাশির একপর্যায়ে সন্দেহজনক দুইটি কন্টেইনার টেইলার তল্লাশি করে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ৩৬ হাজার ৮১৬ বোতল বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত মদের নির্ধারিত মূল্য ৩১ কোটি ৫৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা। ভ্যাটসহ যার মূল্য ৩৬ কোটি ৮৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা। 

খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেফতারদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ঢাকার ওয়ারীর একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নগদ দেশি-বিদেশি মুদ্রা আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯৮ লাখ ১৯ হাজার ৫০০ বাংলাদেশি টাকা, ১৫ হাজার ৯৩৫ নেপালি রুপি, ২০ হাজার ১৪৫ ভারতীয় রুপি, ১১ হাজার ৪৪৩ চায়না ইওয়ান, ৪ হাজার ২৫৫ ইউরো, ৭ হাজার ৪৪০ থাই বাথ, ৯ সিংগাপুর ডলার এবং ১৫ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। 

আমদানিকারকের নাম-ঠিকানা যাচাই করে দেখা যায়, তারা মূলত ঈশ্বরদী ও কুমিল্লার একটি ভুয়া গার্মেন্ট প্রতিষ্ঠানের সুতা ও ববিনের ঘোষণা দিয়ে এসব মদ আমদানি করেছিল। মদ জব্দের পর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে প্রথমে নাজমুল মোল্লা ও সাইফুল ইসলাম নামে দুজনকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে সিন্ডিকেটের হোতা আজিজুল ইসলাম, মিজানুর রহমান আশিক ও আবদুল আহাদের বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়। আশিক ও আহাদ হলেন দুই ভাই এবং আজিজুল ইসলাম তাদের বাবা।

আবদুল আহাদের প্রাথমিক স্বীকারোক্তির উল্লেখ খন্দকার আল মঈন জানান, এই পিতা-পুত্র সিন্ডিকেট মূলত বিদেশ থেকে ইলেকট্রনিক পণ্য আমদানি করে। এ জন্য চট্টগ্রাম বন্দরে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টসহ বিভিন্ন কর্মকর্তার সঙ্গে তাদের সখ্য গড়ে উঠেছিল। পরবর্তীতে তারা দুবাই থেকে ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে এই বিশাল মদের চালান ‌আনে এবং এগুলো আবার তাদের সিন্ডিকেটের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের মাধ্যমে বন্দর থেকে খালাস করিয়ে নেয়।

এই মদের চালান মুন্সীগঞ্জে তাদের ওয়্যারহাউসে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। পরবর্তীতে সেখান থেকে বিভিন্ন স্বনামধন্য বারে সেগুলো সরবরাহ করার কথা ছিল। আহাদ ধরা পড়লেও তার পিতা আজিজ ও বড় ভাই আশিককে গ্রেফতার করতে পারেনি র‍্যাব। তারা দুজন শনিবার ভোরে দুবাই চলে যান। আহাদও দেশ ছাড়ার পরিকল্পনা করছিলেন বলে জানায় র‍্যাব।

 উভয় কনটেইনারে ঘোষিত পণ্যের পরিবর্তে মদ রয়েছে, গোপন সূত্রে এমন খবর পেয়ে ট্রেইলার দুটির অবস্থান শনাক্ত করে আটক করতে সক্ষম হন  র‌্যাব, গোয়েন্দা সংস্থা ও হাইওয়ে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

ক্রাইম ডায়রি//ক্রাইম

See More

Latest Photos