৭ উদ্যোক্তা চিঠি দিলেন এনআরবি ব্যাংকের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

Total Views : 182
Zoom In Zoom Out Read Later Print

৭ উদ্যোক্তা চিঠি দিলেন এনআরবি ব্যাংকের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

চিঠিতে ৭ দিনের মধ্যে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে সকল স্পন্সর শেয়ারহোল্ডারদের জানানোর জন্য বলা হয়েছে

ক্রাইম ডায়রি ডেস্কঃ

 দেশের তরুন প্রজন্মের উদ্যোগে গঠিত সেরা ব্যাংকগুলোর মধ্যে একটি হলো এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক। ২০১৩ সালে গঠিত চতুর্থ প্রজন্মের এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পর সুনামের সাথে চলছিল ব্যাংকটি। হঠাৎই কতিপয় ব্যাক্তির নানা ধরনের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারনে   নানা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে  ব্যাংকটি। খোদ ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমালের বিরুদ্ধেই বিভিন্ন উপায়ে অর্থ আত্মসাৎ, স্বেচ্ছাচরিতা ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এবার এ তালিকায় যুক্ত কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন ব্যাংকের ৭ উদ্যোক্তা।

গত মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) এসব কর্মকর্তার নানা ‘অপকর্ম’ তুলে ধরে ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যান্ড সিইও গোলাম আউলিয়াকে চিঠি দিয়েছেন তারা। এরমধ্যে রয়েছেন ৫ জন উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডার এবং ২ জন উদ্যোক্তা পরিচালক।

তারা হলেন- উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডার তোহেল আহমেদ, সোনাওর আলী, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, এস এম গোলাম রব্বানী চৌধুরী, সাখাওয়াত আলী। উদ্যোক্তা পরিচালক মো. এনায়েত হোসেন ও সরোয়ার জামান চৌধুরী।
চিঠিতে ৭ দিনের মধ্যে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে সকল স্পন্সর শেয়ারহোল্ডারদের জানানোর জন্য বলা হয়েছে।

চিঠির অনুলিপি দেওয়া হয়েছে অর্থমন্ত্রী, মুখ্যসচিব, মন্ত্রী পরিষদ সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, হেড অব বিএফআইইউ ও পরিচালক, বিআরপিডি পরিচালককে। জানানো হয়েছে গনমাধ্যমকেও।

চিঠিতে বলা হয়েছে, একটি চক্র প্রতিষ্ঠাকালীন পর্ষদকে সুকৌশলে নানা অনিয়মের অভিযোগে বিতর্কিত করেছে। ফলশ্রুতিতে ২০১৭ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশে ব্যাংকের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠিত হয়। পর্ষদে প্রতিষ্ঠাকালীন অভিজ্ঞ পরিচালকদের অনুপস্থিতিতে বর্তমান চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল, ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মিয়া ও এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান আদনান ইমামের অধীনে ব্যাংকটি বিগত কয়েক বছরে অব্যবস্থাপনা ও অনিয়মের প্রতীকে পরিণত হয়েছে। সংঘবদ্ধ চক্রের নিয়ন্ত্রণে ব্যাংক পরিচালনায় সেচ্ছাচারিতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং প্রতিনিয়তই বিভিন্ন নেতিবাচক ঘটনায় দেশ-বিদেশের সংবাদ মাধ্যমের শিরোনাম হচ্ছে, যা প্রবাসীদের ব্যাংক হিসেবে অগ্রহণযোগ্য ও প্রবাসীদের সম্মানহানির শামিল।

আরও বলা হয়েছে, বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি এন্ড কাস্টমার সার্ভিসেস ডিপার্টমেন্ট (এফআইসিএসডি) ২০২২ সালের এপ্রিল-মে মাসে প্রায় ১৫ কর্মদিবসের বিশেষ পরিদর্শন বা অডিট পরিচালনা করেন। পরিদর্শনে ব্যাংকের পর্ষদের সদস্যদের মালিকানাধীন এনআরবিসি ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে চুক্তিভিত্তিক জনবল নিয়োগ, গাড়ি ক্রয়/ভাড়া, শাখা-উপশাখায় ডেকোরেশনের কাজ সম্পাদন করা ও সার্ভিস চার্জ প্রদানের মাধ্যমে ব্যাংকের আয় হ্রাসসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আউট সোর্সিং নীতিমালা ও ব্যাংকের প্রকিউরমেন্ট এন্ড এক্সপেন্ডিচার ম্যানেজমেন্ট পলিসির গুরুতর লঙ্ঘনের অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। তাছাড়া লোকবল নিয়োগে চাতুর্যের আশ্রয় নেওয়া, একই দিনে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া এবং নিয়োগ সংক্রান্ত পর্ষদের নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগ উল্লেখিত হয়েছে।

চিঠিতে উদ্যোক্তারা বিশেষ বিবেচনায় ব্যাংকের ২৭ কর্মকর্তাকে ৫ থেকে ১৩টি ইনক্রিমেন্ট প্রদানের অভিযোগ করেছেন। তারা বলেন, বিশেষ পরিদর্শন রিপোর্টে আরও উল্লেখিত হয়েছে অভিজ্ঞ জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাংকের জনবল নিয়োগ নীতিমালা অনুসৃত হয়নি। তাছাড়া ব্যাংকের রুপপুর শাখায় পাপারোমা নামক প্রতিষ্ঠানে ৫ কোটি টাকার ঋণ বিতরণে অনিয়ম ও জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে।ঋণের বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর তড়িঘড়ি করে সমুদয় ঋণ পরিশোধ করা হলেও ঋণের অনিয়ম ও জালিয়াতির ঘটনা তামাদি হয় না।

ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে ব্যাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন দলের সাথে আপনার অসহযোগিতার বিষয়েও বিশেষ পরিদর্শন রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।

চিঠিতে গোলাম আউলিয়ার বরাত দিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, ব্যাংকের বর্তমান পর্ষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যাংকের দৈনন্দিন কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ, শেয়ারবাজারের গ্যাম্বলারদের সাথে যোগসাজশে বিভিন্ন শেয়ারের দামে কারসাজি, জনবল নিয়োগে দুর্নীতি, স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ব্যাংকের সাথে একচেটিয়ে ব্যবসা, শাখা-উপশাখা প্রতিষ্ঠার আড়ালে দুর্নীতি, বেনামী ও নিজস্ব বা স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ বিতরণ, এসকেএস ফাউন্ডেশনের সাথে বিতর্কিত চুক্তি সম্পাদন করে পার্টনারশিপ শাখার মাধ্যমে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম পরিচালনাসহ অসংখ্য দুর্নীতির বিষয়ে অবগত হয়েছি।

চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি এন্ড কাস্টমার সার্ভিসেস ডিভিশন কর্তৃক ২০১৬ সালের ১৪ নভেম্বর হতে পরিচালিত বিশেষ পরিদর্শন রিপোর্ট অনুসারে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শহীদুল আহসান কর্তৃক তার আত্মীয় এবিএম আব্দুল মান্নানের ছদ্মাবরণে ক্রয়কৃত সকল শেয়ার লক-ইন অবস্থায় ২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবর ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমালের ব্যবসায়িক পার্টনার ও রিলায়েবল বিল্ডার্সের কর্ণধার শফিকুল আলম মিথুনের অনুকূলে ১,৬৫,৭২,৯৯২টি, এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান আদনান ইমামের স্ত্রী নাদিয়া মোমিন ইমামের অনুকূলে ১,৩৮,৪৫,৯০৪টি ও মার্কেন্টাইল ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শহীদুল আহসানের মেয়ে রেহনুমা আহসানের অনুকূলে ১,৪৫,৮০,৬১৫টি শেয়ার ব্লক মার্কেটে বিক্রয়সূত্রে হস্তান্তর করা হয়েছে।

কোন প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ঘোষিত বাজেয়াপ্তযোগ্য শেয়ার ক্রয়-বিক্রিয়ের প্রস্তাব পর্ষদ সভায় উত্থাপিত করা হয়েছে সেটাও জানতে চাওয়া হয়েছে।

পাশাপাশি শফিকুল আলমের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রিলায়েবল বিল্ডার্সের অনুকূলে এনআরবিসি ব্যাংকের হাতিরপুল শাখা থেকে ব্যাংকের ক্রেডিট পলিসির কোন ধারার ভিত্তিতে বরিশালের আলেকান্দা মৌজায় অবস্থিত মাত্র ৩.০৬ কোটি টাকা (বিক্রয় মূল্য ২.৪৫ কোটি টাকা) মূল্যের ৯.৩০ শতাংশ জমিকে সহায়ক জামানত রেখে প্রায় ৪৫০.০০ কোটি টাকার ঋণ ব্যাংক কর্তৃক অনুমোদন করা হয়েছে এবং এই ঋণ বিতরণে পর্ষদ কর্তৃক প্রভাবিত হয়েছেন কিনা সে বিষয়ে ব্যাখ্যা জানতে চাওয়া হয়েছে।

এছাড়া প্রাসঙ্গিকভাবেই পর্ষদ চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ট ব্যক্তি রাসেল আহমেদ লিটনের বিতর্কিত এনজিও এসকেএস ফাউন্ডেশনে সাথে শতাধিক পার্টনারশিপ শাখা পরিচালনার চুক্তির ফলে ব্যাংকের গ্রাহকদের তথ্যের গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা, শাখার নিরাপত্তা, ঋণ বিতরণ ও আদায়ের পলিসি, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন ভাতাদি ও কমিশন পলিসি, সিএসআর কার্যক্রম ও একাধিক শাখা-উপশাখা থেকে এসকেএস ফাউন্ডেশন ও তার অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের নামে বিপুল অংকের ঋণ প্রদান নিয়েও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে।

চিঠিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন উল্লেখ করে আরও বলা হয়েছে, ব্যাংকের ডিএমডি ও সিএফও হারুনুর রশীদ, এসইভিপি সাফায়েত কবির কাননের নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে। আইটি প্রধান ও এসভিপি দিদারুল হক মিয়া, এসভিপি মেজর (অব:) পারভেজ হোসেন, এসভিপি কমান্ডার (অব:) ফরহাদ সরকার, কোম্পানি সচিব মেজর (অব:) আহসান হাবিব, হেড অব একাউন্টস ভাইস প্রেসিডেন্ট জাফর ইকবাল হাওলাদার, চিফ ডিলার এফভিপি জমির উদ্দিন, কর্পোরেট মার্কেটিং বিভাগের প্রধান এভিপি কামরুল হাসান, হাতিরপুল শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক কবির হোসেন ও চেয়ারম্যানের পিএস এভিপি আসিফ ইকবাল এর অন্যতম সদস্য।

এই চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, প্রধান কার্যালয়, বিভিন্ন শাখা ও উপশাখায় কর্মরত কর্মকর্তারা সিন্ডিকেটের নির্দেশেই পরিচালিত হয়। ভাইস প্রেসিডেন্ট জাফর ইকবাল হাওলাদারের বিরুদ্ধে নিজ নামে ও বেনামে (ভোলা অটো রাইস মিলস লিমিটেড, মেসার্স যোবায়দা এগ্রো ও ইউনাইটেড ফর্টিফিকেশন ইন্ডাস্ট্রিজ) ওভার ড্রাফট, চলতি হিসাব ও এলসি খুলে অসংখ্য সন্দেহজনক লেনদেন সম্পাদন, ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে বেতনের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। এফভিপি জমির উদ্দিনের চলতি ও ওভার ড্রাফট একাউন্টেও সন্দেহজনক অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগ আছে।

জাফর ও জমির পরস্পর তাদের একাউন্টের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন। এভিপি কামরুল হাসান এনআরবিসি ব্যাংকের প্রিন্সিপাল শাখায় এম কামরুল ওভারসীস ও এম কামরুল ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলস নামের কাগুজে কোম্পানির নামে চলতি একাউন্ট পরিচালনার মাধ্যমে অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করছেন। এম কামরুল ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলসের নামে প্রিমিয়ার ব্যাংক, কাকরাইল শাখায় একাউন্ট ও বড় অংকের এফডিআর পরিচালনা ও এই অর্থের উৎস নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে।

এছাড়া কামরুল হাসান পরিচালিত একাউন্টগুলোর মাধ্যমে সন্দেহজনক লেনদেন সম্পাদনের তথ্যও প্রকাশিত হয়েছে। অথচ এতো অনিয়ম ও সন্দেহজনক লেনদেনের রেকর্ড থাকা সত্ত্বেও প্রতিবছরই তাদের ওভারড্রাফট একাউন্ট ব্যাংকের ম্যানেজমেন্ট কর্তৃক নবায়ন করা হয়েছে।

আইটি প্রধান ও এসভিপি দিদারুল হক মিয়া, এসভিপি মেজর (অব:) পারভেজ হোসেন ও এসভিপি কমান্ডার (অব:) ফরহাদ সরকারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের আউটসোর্সিং পলিসি, ব্যাংকের প্রকিউরমেন্ট অ্যান্ড এক্সপেন্ডিচার ম্যানেজমেন্ট পলিসি উপেক্ষা করে পর্ষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যানের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সাথে বিধিবহির্ভূত ব্যবসা (জনবল নিয়োগ, গাড়ি ক্রয়/ভাড়া, শাখা-উপশাখা ডেকোরেশন, সফটওয়ার ক্রয়) সম্পাদন করে ব্যাংকের স্বার্থহানির গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।

এসভিপি কমান্ডার (অব:) ফরহাদ সরকার ব্যাংকের কর্মকর্তা থাকাকালীন ডেপুটেশনে এনআরবিসি ম্যানেজমেন্টের সিইও’র দায়িত্ব পালন করে “কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট” সৃষ্টি করেছেন।
হাতিরপুল শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক কবির হোসেন রিলায়েবল বিল্ডার্স, ফরচুন সুজসহ অন্যান্য বিধিবহির্ভূত ঋণের অন্যতম হোতা। ব্যাংকের চেয়ারম্যানের পিএস এভিপি আসিফ ইকবাল, তার স্ত্রী তাকিয়া নিশি ও তাদের পরিবারের সদস্যদের নামে ব্যাংক একাউন্ট খুলে শেয়ার মার্কেট থেকে কারসাজিলব্ধ অর্থ লন্ডারিংয়ের অভিযোগও বর্তমানে দুদকে তদন্তাধীন রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

উদ্যোক্তা পরিচালকেরা ব্যাংকের প্রাথমিক মূলধনের যোগান দিলেও কালের পরিক্রমায় লক্ষ আমানতকারী আমাদের সাথে যুক্ত হয়েছেন। তাদের আমানতের শক্তিতেই এনআরবিসি ব্যাংক ব্যবসা পরিচালনা করছে। তাছাড়া ২০২২ সালে স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্তির মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও আমাদের সাথে যুক্ত হয়েছেন। ব্যাংকটিকে কয়েকজন পরিচালক বা কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হলে শিগগিরই ব্যাংকের সুনাম ও আস্থা তলানীতে গিয়ে ঠেকবে, ফলে ব্যাংক সংশ্লিষ্ট সকলেই ক্ষতিগ্রস্থ হবে বলে চিঠিতে জানানো হয়েছে।

আরও বলা হয়েছে,২০২১ সালে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের যোগদানের পর থেকেই চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যানের অন্যায় হস্তক্ষেপ ও সিন্ডিকেট সদস্যদের দৌরাত্ম ক্রমবর্ধমানহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। দুর্নীতি ও অনিয়ম আরও গভীরে প্রথিত হয়েছে। দুষ্টের দমনের দায়িত্ব নিয়েও এসময়ে দুর্নীতিবাজদের উৎসাহিত করতে বিশেষ ইনক্রিমেন্ট ও পদোন্নতির ব্যবস্থা করেছেন। বিপরীতে সৎ, কর্তব্যপরায়ন ও দুর্নীতির অসহযোগিতাকারী বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের হয়রানি ও চাকুরিচ্যুত করা হচ্ছে।

বিশেষ বাহিনী ও টর্চার সেল গঠন করে কর্তব্যনিষ্ঠ কর্মকর্তাদের ভীতি প্রদর্শন ও হয়রানি করার অভিযোগও বাংলাদেশ ব্যাংকে তদন্তাধীন রয়েছে। ঋণের প্রকৃত সুবিধাভোগী সনাক্ত না করেই রিলায়েবল বিল্ডার্স, ইক্সোরা এ্যাপারেলসসহ পরিচালকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট অসংখ্য প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে উদ্দেশ্যে করে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে আপনার ওপর যে পবিত্র দায়িত্ব অর্পন করা করা হয়েছে, তার ভিত্তিতে ব্যাংক কোম্পানি আইন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সংশ্লিষ্ট সিকিউরিটিজ ল’ মোতাবেক ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ কার্যক্রমে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা, দুর্নীতিগ্রস্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ, ঋণ ও অগ্রীম অনুমোদন-বিতরণে সচ্ছতা আনয়ন ও নিয়ম পরিপালনে নিরপেক্ষ ও নিয়মতান্ত্রিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে দায়ি পর্ষদ সদস্য ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সবিনয় অনুরোধ করছি।

অন্যথায়, পূর্ববর্তী ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ন্যায় আপনার বিরুদ্ধেও যথাযথ বিধি মোতাবেক ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৪৪, ৪৫ ও ৪৬ ধারা আরোপসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণর অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। খোদ উদ্যোক্তারা অভিযোগ করায় বিষয়টি দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

ক্রাইম ডায়রি // ক্রাইম 

See More

Latest Photos